বুধবার ০৮ মে ২০২৪ বৈশাখ ২৪ ১৪৩১ ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো ধান চাষে মাঠ এখন কৃষকদের পদচারণায় মুখরিত। জেলার কৃষকরা বোরো ধান চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত বছরে ভালো ফলন হওয়ায় এ বছরও ব্যাপক হারে বোরো ধান চাষে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষক। বীজ, সার ও কীটনাশকসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় কৃষকেরা প্রত্যাশা করছেন বাড়তি ফলনের। আমন ধান কাটা-মাড়াই শেষে বোরোর আবাদ নিয়ে এখন তাই ব্যস্ত চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শীতে এবার বীজতলার তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা কেউ সেচ দিচ্ছেন, কেউ আইলে মাটি তুলছেন, আবার কেউ জমিতে সার দিচ্ছেন। কেউ বা পাওয়ার টিলার ও মই দিয়ে জমির মাটি সমান করছেন। জেলার প্রতিটি মাঠে এখন শুধু চলছে বোরো ধান রোপণের উৎসব। ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠের কাদা-জলে ভিজে ধানের চারা রোপণের কার্যক্রম চালাচ্ছেন কৃষকরা। বর্তমানে ধানের মাঠগুলো এখন কৃষকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের পলশা গ্রামের বোরো ধান চাষী প্রফুল্ল কুমার রবিদাস বলেন, এই বছর বোরো ধান চাষে বিঘা প্রতি ১৮ হাজার টাকা খরচ করেছেন। এখন আমন ধান চাষ করার পর এই বোরো ধান চাষ করছি, আশা করছি ভালো ফলন পাবো, আরেকজন চাষী মিলন হাসান বলেন, কীটনাশক স্প্রে করার পর, ব্লাস্ট আক্রমন করলেও সেটা আমাদের ফসলের তেমন কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
অপরদিকে কৃষক আবদুল জলিল বলেন, পার্চিং পদ্ধতিতে এই বছর বোরো ধান চাষ করছি। পোকামাকড় যাতে এই বোরো ধানের চারার কোন ক্ষতি করতে না পারে তার জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ আমরা নিচ্ছি। তাছাড়া বীজ, সার ও কীটনাশক এর সরবরাহ ভালো আছে। আশা করছি ধানের ফলনও ভালোই হবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ৪৯ হাজার ৩শ ৬০ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ৭১ শতাংশ জমিতে বোরো চারা রোপণ স¤পন্ন হয়েছে।
এবিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য), ড. সাইফুল আলম বলেন, কৃষকরা যেন বোরো চাষে কোনো প্রকার সমস্যায় না পড়েন এজন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। যেখানেই সমস্যা সেখানেই আমাদের উপস্থিতি এবং সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে অধিক ফলনের জন্য পরিমিত সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং সার্বিক পরিচর্যায় কৃষকদের সচেষ্ট হতে আমরা সব সময় পরামর্শ দিয়ে আসছি।
তিনি আরও বলেন, এবছর যে বীজতলা হয়েছে, আদর্শ বীজতলা, শুকনো বীজতলায় যা অর্জিত হয়েছে সেটি দিয়ে, আমাদের এবছর যে টার্গেট সেটি আমরা অর্জন করতে পারবো এবং এখন পর্যন্ত ধানের বা চারার অবস্থা ভালো আছে। বোরো ধান চাষে যে সমস্ত প্রযুক্তি রয়েছে আমরা তার বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। বীজতলা শোধনের সময় থেকে কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিয়ে আসছি।
ভর্তুকির বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সারসহ সেচ কাজেও কৃষককে ভর্তুকি দিয়ে আসছে। জেলায় পৌষ মাসের মাঝামাঝি থেকে বোরো আবাদ শুরু করেন কৃষকরা। এ আবাদ মাঘ মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। আর ধান তোলা হবে আগামী চৈত্র-বৈশাখ মাসে। কৃষকের কষ্টের ফলন ধানের দাম যাতে বৃদ্ধি হয় এটাই প্রত্যাশা করেন কৃষকেরা।
chapainawabgonj.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়