ব্রেকিং:
ঘুষ বাণিজ্য ও হয়রানির অভিযোগ এসিল্যান্ড আঞ্জুমানের বিরুদ্ধে ঈদুল আজহার ছুটিতে শিবগঞ্জে এক সপ্তাহে ৩ খুন ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে ট্রাম্প-পাকিস্তান সেনাপ্রধানের বৈঠক চাঁপাইনবাবগঞ্জে লাঠিচার্জে ১১ নারী আহতের ঘটনায় ওসি প্রত্যাহার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২.৫ কিলোমিটার সড়কে খোয়া বিছিয়েই লাপাত্তা ঠিকাদার তবু আপন কর্তব্যে অবিচল সেনাবাহিনী টিউলিপসহ রাজউকের ৯ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব তলব করোনায় আরও ২ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৮

মঙ্গলবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ১৭ ১৪৩২   ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

সর্বশেষ:
ঘুষ বাণিজ্য ও হয়রানির অভিযোগ এসিল্যান্ড আঞ্জুমানের বিরুদ্ধে ঈদুল আজহার ছুটিতে শিবগঞ্জে এক সপ্তাহে ৩ খুন ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে ট্রাম্প-পাকিস্তান সেনাপ্রধানের বৈঠক চাঁপাইনবাবগঞ্জে লাঠিচার্জে ১১ নারী আহতের ঘটনায় ওসি প্রত্যাহার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২.৫ কিলোমিটার সড়কে খোয়া বিছিয়েই লাপাত্তা ঠিকাদার তবু আপন কর্তব্যে অবিচল সেনাবাহিনী টিউলিপসহ রাজউকের ৯ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব তলব করোনায় আরও ২ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৮
৩২৫

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপিতে এগিয়ে হারুন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রকাশিত: ২৪ আগস্ট ২০২৫  

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) সংসদীয় আসনে বিএনপির প্রার্থী–জট থাকলেও জামায়াতে ইসলামী অনেক আগেই একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। এ আসনে বিএনপির ৫ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তাদের বেশির ভাগই নানাভাবে মাঠে আছেন। এতে দলগতভাবে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নানাভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে জামায়াতের একক প্রার্থী গণসংযোগে ব্যস্ত। এ আসনে বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামী।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন বাস্তবতায় জেলার রাজনীতি মূলত বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে। বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা আগামী সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক দলীয় ও সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করেছেন। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় নানা কর্মসূচি পালন করছেন। নিজ দলের বার্তা তৃণমূলে পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। এর বাইরে গত সাড়ে ১৫ বছর রাজত্ব করা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। অন্যদিকে জুলাই বিপ্লবের কারিগরদের সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চাঁপাইনবাবগঞ্জে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে এ আসনে তাদের কোনো প্রার্থী এখনো চূড়ান্ত হয়নি। নির্বাচনকেন্দ্রিক তৎপরতা একেবারেই নেই।



স্থানীয় ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,  চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে। একাধিক গ্রুপে বিভক্ত বিএনপিতে একাধিক প্রার্থী তৎপর। মনোনয়ন লড়াইয়ে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এই আসনে দলটির মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকা দীর্ঘ এবং তাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য। বিএনপির এই বিশৃঙ্খলার বিপরীতে জামায়াতে ইসলামী অনেক বেশি সু-সংগঠিত। বিএনপি ও জামায়াত দু দলই এ আসনের  গুরুত্বপূর্ণ ‘খেলোয়াড়’। যে দল সবচেয়ে বিচক্ষণতার সঙ্গে নিজেদের ঐক্য ধরে রাখতে পারবে এবং গণ-অভ্যুত্থানের শক্তি তরুণ ভোটারদের সমর্থন আদায় করতে পারবে, জয় তাদের পক্ষেই যাবে। অনেক আগেই জামায়াত ইসলামী একক প্রার্থী চূড়ান্ত করে জোর কদমে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও এ আসনটির ভোটের মাঠে বরাবরই জনপ্রিয় ধানের শীষ।



১৯৯১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ৮টি সংসদ নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেছে, এ আসনে বিএনপি সর্বোচ্চ চারবার নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ তিনবার, জামায়াতে ইসলামী একবার জয় পেয়েছে। এর মধ্যে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ‘বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন’, ‘রাতের ভোট’ ও ‘ডামি নির্বাচন’ খ্যাত তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনও আছে। এ আসনে ১৯৯৬ সালে প্রথমবার ধানের শীষের প্রার্থী হয়ে বাজিমাত করেন তৎকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা হারুনুর রশিদ। এরপর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ কোন নির্বাচনে হারুনকে নিরাশ করেনি ভোটাররা।

২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন হারুন। রাতের ভোটের সংসদে গিয়ে আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করে দেশব্যাপী তুমুল জনপ্রিয়তা পান হারুনুর রশিদ। চার বারের সংসদ সদস্য, এলাকায় জনপ্রিয়তা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আস্থাভাজন হিসেবে হারুনুর রশিদের মনোনয়ন নিশ্চিত বলছেন তার অনুসারীরা। সম্প্রতি এক সমাবেশ তাকে মনোনয়নের গ্রীণ সিগন্যাল দেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছেন হারুনুর রশিদ। হারুন অনুসারীরা বলছেন, এ আসনে বিএনপির অর্ধডজন নেতা মনোনয়ন দাবি করলেও হারুনের বিকল্প হওয়ার যোগ্য কেউ নয়। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হারুনুর রশিদ এ আসনে দীর্ঘদিন একক প্রার্থী।



এদিকে এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী নুরুল ইসলাম বুলবুলও হেভিওয়েট। এলাকায় তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। জামায়াতের রাজনৈতিক কৌশল ও সুশৃঙ্খল সংগঠন ভোটের মাঠে তাদের এগিয়ে রাখবে। সব মিলিয়ে এই আসনে বিএনপি ও জামায়াতের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলছে।

এদিকে এ আসনে মনোনয়নের জন্য আলাদাভাবে সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গণসংযোগ চালিয়ে আসছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম জাকারিয়া ও সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম চাইনিজ। গোলাম জাকারিয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দীর্ঘ বিরতির পর দলের দুঃসময়ে আবারো দ্বায়িত্ব দেয়া হয় বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ গোলাম জাকারিয়া ও প্রভাবশালী বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম চাইনিজকে। দলের দ্বায়িত্ব নিয়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তারা সক্রিয় ছিলেন। সংগঠন গোছানোর পাশাপাশি তারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফার প্রচারের মধ্যদিয়ে ভোটারদের কাছাকাছি যাচ্ছেন। বিএনপির ৩১ দফার আলোকে একটি সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যয়- সেটি জনগণের কাছে তুলে ধরছেন। ক্রান্তিকালে দলের হাল ধরে রাখা এবং হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে ইতিবাচক ভুমিকার অবদান হিসেবে মনোনয়নের দাবিদার জেলা বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা। এছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, বুয়েট ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শাহাদাত আহমেদ মাসুম এই আসনে মনোনয়ন চাইবেন বলে আলোচনা আছে।



এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। তিনি ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন, সম্প্রতি তিনি পদ্মা নদীর ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান। পরে তার পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে ত্রান সামগ্রীও বিতরণ করা হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, হাসিনা সরকারের পতনের পর মানুষের মধ্যে নতুন স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার জন্ম নিয়েছে। দেশের জনগণ ৫৪ বছর অন্য সব রাজনৈতিক দলগুলোকে দেখেছে। কিন্তু এবার জামায়াতকে ঘিরেই নতুন স্বপ্ন দেখতে চায়।

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী গোলাম জাকারিয়া বলেন, তিনি জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওই সময়ে থেকে দলকে সুসংহত করেছেন এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ধনের শীষ প্রতীককে প্রত্যন্ত গ্রামে পরিচিত করেছেন। দলের দুর্দিনে তিনি আবারো হাল ধরে রেখেছেন। এ কারণে মনোনয়ন চাইলে দল আমাকে নিরাশ করবে না। এছাড়া বেশির ভাগ নেতাকর্মীই আমার পক্ষে আছেন। সাধারণ মানুষেরও প্রত্যাশা যেন আমি নির্বাচন করি। দলমত নির্বিশেষে সবার সমর্থন আছে। তাই দলের প্রার্থী হলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী তিনি।



মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, দলের প্রতি আমার ত্যাগ রয়েছে, কঠিন সময়ে দলের দায়িত্ব নিয়ে পালন করে যাচ্ছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই-সংগ্রামে রাজপথে ছিলাম। অবদান বিবেচনায় দল নিশ্চয়ই আমাকে অগ্রাধিকার দেবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক তবিউল ইসলাম তারিফ বলেন, এ আসনে একটি নাম সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়, তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি হারুনুর রশিদ। এই হেভিওয়েট নেতা এখানে বার বার জনগণের ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিএনপির সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ এবং এলাকার উন্নয়নের রূপকার। আগামী নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে হারুনুর রশিদকে সামনে রেখে যুবদলের নেতাকর্মীরা মাঠে কাজ করছেন। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ
এই বিভাগের আরো খবর