শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১৩ ১৪৩১ ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি :
প্রকাশিত: ২১ মে ২০২২
সরকার যখন দেশের অসহায় মানুষের পাশে জমিসহ বাড়ী নিমার্ণ করে দিচ্ছে। দ’ুবেলা দু’মুঠো খাবারের ব্যবস্থা করতে বিধবা,বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করেছে। ঠিক এমন সময় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে সরকারের এ উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ভাতাভোগিদের টাকা পাবার পূর্বেই তাদের বাড়ি বাড়ি থেকে উৎকোচ সংগ্রহ করা হচ্ছে।আর এ কাজে জনপ্রতিনিধিরা তাদের গ্রাম পুলিশ কে ব্যবহার করছে। এ অভিযোগ ভোলাহাট উপজেলার দলদলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বারদের বিরুদ্ধে।গত সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ভাতাভোগীদের একাউন্ট করতে খরচ লাগবে এ প্রচারনা চালিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, গত ১৭ মে থেকে ২৪ মে পর্যন্ত উপজেলার দলদলী ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় বিধবা ৩’শ৬৫ ও বয়স্ক ৩’শ ৬৮জন সহ মোট ৭’শ ৩৩জনের মধ্যে ব্যাংক এশিয়ার এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে জনপ্রতি ৪হাজার ৫’শ টাকা করে দেয়া অব্যহত আছে। ভাতা প্রদান শুরুর পূর্বে চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হক ও ওয়ার্ড মেম্বারেরা গোপন বৈঠকে অলিখিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গ্রাম পুলিশদের বাড়ীতে বাড়ীতে পাঠিয়ে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলার নামে ৩’শ টাকা করে আদায় করে। যারা সে সময় দিতে পারেনি তাদেরকে ভাতা নিতে আসার সময় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বারদের মাধ্যমে ৩’শ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। ভূক্তভুগিদের অভিযোগ অনুযায়ী দলদলী ইউনিয়নের মোট ৭’শ৩৩জন ভাতাভোগির কাছে ৩’শ টাকা করে ২লাখ ১৯ হাজার ৯’শ টাকা আদায় করা হয়েছে। ভাতাভোগি বিধবা মোসাঃ রাবেয়া বেগম, মোসাঃ মানোয়ারা বেগম, মোসাঃ লতা বেগম, মোসাঃ মাজিদা বেগম, মোসাঃ মাবিয়া বেগম, বয়স্ক ভাতাভোগি খোসমোহম্মদ, মোঃ মমতাজ উদ্দিনসহ অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে তাদের প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রামপুলিশরা ব্যাংক এ্যাকাউন্ট করার নামে খরচ হিসেবে ৩’শ টাকা করে নিয়ে এসেছে। এসময় তাদের জানানো হয় টাকা না দিলে ভাতার টাকা পাওয়া যাবে না । আর এ সরল বিশ^াসে প্রত্যেকেই এ টাকা গ্রাম পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট মেম্বারদের দিয়েছে। এদিকে বিষয়টি জানার পর সাংবাদিকদের তৎপড়তা বেড়ে গেলে টাকা নেয়ার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম বৃহষ্পতিবার দুপুরে পরিষদে এসে টাকা নেয়ার সত্যতা পান। এ সময় তিনি সকলকে টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন। তবে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত (শনিবার বিকেল পর্যন্ত)টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। টাকা ফেরত দেয়ার কথা বললে কাউকে টাকা ফেরত দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ভাতাভোগিরা। ২নং ওয়ার্ড গ্রামপুলিশ মোঃ আব্দুল হান্নান বলেন, আমাদের ৩’শ টাকা করে তুলতে বলায় বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভাতাভোগিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এসেছি।
এ ব্যাপারে ১নং ওয়াড় মেম্বার মোঃ আরসেদ আলী খালেকের সাথে যোগাযোগ করা হলে খরচ বাবদ ৩’শ টাকা করে নেয়ার কথা স্বীকার করেন। একই বিষয়ে ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ বাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ৩’শ টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ টাকা দিয়ে দুপুরে খাইদায় হবে।
এ ব্যাপারে দলদলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হক চুটু ভাতাভোগিদের কাছে টাকা নেয়ার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন তবে তিনি মেম্বারদের ঘারে দোষ চাপিয়ে দায়মুক্তির চেষ্টা করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম জানান, বিষয়টি দু:খজনক। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গেলে কেউ কেউ সত্যতা স্বীকার করেন আবার কেউ অস্বীকার করেছেন।এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টরা ক্ষমা চান এবং প্রত্যেক ভাতাভোগিকে আদায়কৃত টাকা ফেরত দেয়ার অঙ্গীকার করেন।
অপরদিকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রাব্বুল হোসেন বলেন, যাঁরা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করবেন তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবী করেন।
chapainawabgonj.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়