শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১৩ ১৪৩১ ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২২
আমের জেলা হিসেবে পরিচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এ জেলায় দুই-পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আম। ঝড়-বৃষ্টিতে অনেক বাগানের ছোট-মাঝারি ধরনের অপরিপক্ক আম ঝরে পড়ে। আর এসব আমই মণপ্রতি ৮০-২০০ টাকায় কিনে ঢাকায় পাঠাচ্ছেন পাইকারা।
গত সোমবার মধ্যরাতে ঝড়-বৃষ্টিতে জেলার সদর, শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুরে অনেক বাগানের আম ঝরে পড়েছে। এসব আমের বেশিরভাগই অপরিপক্ক। গ্রামের নারী-পুরুষ ও কিশোর-কিশোরীর কুড়ানো এসব আম পাইকারিরা কিনে আড়তে নিচ্ছেন। পরে আড়ত থেকে ট্রাকে করে এসব আম যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা জানান, সোমবার মধ্যরাতে জেলায় কালবৈশাখী বৃষ্টি হয়। এ সময় গাছ থেকে অনেক অপরিপক্ক আম ঝরে পড়ে। এসব আম গ্রামের লোকজন কুড়িয়ে দুই-পাঁচ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। আমের জাতভেদে একেক রকম দামে বিক্রি হয়েছে এসব আম।
গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের বৈরতলা গ্ৰামের আজাদ আলী বলেন, সোমবারের ঝড়ে সাত বস্তা আম কুড়িয়েছিলাম। এসব আম আড়াই থেকে তিন টাকা কেজি করে বিক্রি করলাম। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ৬০০ টাকার আম বিক্রি করেছি। আর আচার করার জন্য কিছু ফজলি আম বাড়িতে রেখেছি।
নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের আমচাষি আল আমিন বলেন, প্রায় সাত বিঘা জমিতে মাঝারি আকারের প্রায় ৫৭টি আমগাছ রয়েছে। এসব গাছে ঝুলছে আশ্বিনা, ফজলি, ক্ষিরসাপাত, লক্ষণভোগ জাতের আম। হঠাৎ সোমবার রাতে ব্যাপক বৃষ্টির সঙ্গে ঝড় হয়। এতে অনেক আম পড়ে নষ্ট হয়। এসব আম গ্রামের অনেকেই কুড়িয়ে দু-পাঁচ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন।
পাইকারি ব্যবসায়ী তহরুল ইসলাম বলেন, ঝরে পড়া আম তেমন কাজে লাগে না। এছাড়া এসব আম পরিপক্ক নয়। তাই অনেকেই আচার করেন। তবে অনেক বেশি আম হওয়ার কারণে বাধ্য হয়েই বিক্রি করতে হয়। আমরাও কম দামে এসব আম পাই। পরে এসব রাজধানী ঢাকায় ট্রাকে করে পাঠিয়ে দেই। ঢাকায় এসব আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মঙ্গলবার দুই ট্রাক আম কিনেছি।
তিনি আরো বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ও রাতে আমভর্তি দুটি ট্রাক ঢাকায় রওনা দিয়েছে। এখানে ১১০-২০০ টাকা মণ দরে কিনলেও ঢাকায় ৪০০-৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হবে। তবে আমের জাত হিসেবে দাম ভিন্ন রয়েছে। যেমন আশ্বিনা, লক্ষণভোগ গুটি আমের কেজি তিন-চার টাকা আর ফজলি আম পাঁচ টাকা কেজি দরে কেনা হয়েছে।
আরেক পাইকারি ব্যবসায়ী আব্দুল মাজেদ বলেন, ঝরে পড়া আমে দাগ পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। তাই বেশির ভাগ সময় আম পরিপক্ক থাকলে তা স্থানীয় জুস ফ্যাক্টরিতে চলে যায়। তবে এখন আম অপরিপক্ক হওয়ায় জুসের পাল্প করা যাবে না। তাই কম দামে কিনে ট্রাকে করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, সোমবার রাতে জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। তবে গোমস্তাপুরে ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। ঝড়ে আম ও লিচুর অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনেক অপরিপক্ক আম গাছ থেকে ঝরে পড়েছে। এসব আম তেমন কোনো কাজে না আসায় কম দামে বিক্রি হয়।
chapainawabgonj.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়