বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ১০ ১৪৩১ ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২২ মে ২০২৩
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে ঝড়েপড়া প্রতি বস্তা আম ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রোববার (২১ মে) রাতে বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে ১৫ মিনিট ধরে ঝড় হলে এই আমগুলো গাছ থেকে ঝরে পড়ে। আম কেনাবেচা শুরুর আগেই এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বড় ক্ষতি হয়ে গেছে বাগান মালিক ও চাষিদের কয়েক দিন পরে যে আম ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো, সেই আম ঝরে পড়ার কারণে বিক্রি করতে হচ্ছে ১ থেকে ২ টাকা কেজি দরে।
ঝড়েপড়া আমগুলো কাজে লাগানো পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি কৃষি বিভাগ বলছে, কিছু ক্ষণের ঝড়ে ২৮ কোটি টাকার আম ঝরে পড়েছে। এই বছর ভোলাহাটের আম বাগানগুলোতে বাম্পার ফলন হয়েছে। রোববার রাতের ঝড়ে বাগানে ফজলি, আশিনা, গুটিসহ অনান্য দেশি-বিদেশি জাতের আমগুলো মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বাজারে বিক্রিযোগ্য আমগুলো বাগানের মালিকরা প্রতিবস্তা ৩০-৪০ টাকা দামে বিক্রি করছে। এছাড়াও স্থানীয় বাজারগুলোতে ঝরে পড়া আমগুলো ১ থেকে ২ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে।
রাকিব উদ্দিন নামে এক বাগান মালিক বলেন, গত রোববার রাতে ঝড় হওয়ার কারণে বাগানের অধিকাংশ গাছের আম ঝরে পড়ে গেছে। বাগানে এতটা আম পড়ে ছিল যে পায়ে হাঁটার জায়গাটুক পর্যন্ত ছিল না। বাগানের বড় বড় আম গাছের ডালগুলো ভেঙে গেছে, ওইসব ডালগুলোতেও ব্যাপক আম ধরে ছিল।
তার ভাষ্য মতে, ৬০-৭০ বছরের জীবনে এত প্রবল ঝড় চোখে দেখেনি। এলাকায় প্রতিটা বাড়ির মানুষ ২০-৩০ বস্তা আম কুড়িয়েছে ঝড়ে। এখনও বাগানে আম পড়ে আছে। এবার আম ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হবে। প্রতিটা আমে ৮ থেকে ৯ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। এত লোকসান চোখের সামনে দেখে আম চাষি ও বাগান মালিকরা হতাশায় ভুগছেন।
সেলিম রেজা নামের আরেক বাগান মালিক বলেন, ‘ভোলাহাট উপজেলার মানুষ আম বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল। গত রোববার রাতে প্রচণ্ড ঝড়ে আম বাগানের ৮০ শতাংশ আম ঝরে পড়েছে। বর্তমানে ভোলাহাটের মানুষের নাজেহাল অবস্থা। গাছে তেমন আম নেই। বাগানে যে পরিমাণে আম ছিল তাতে দাম পেতাম ৫ লাখ টাকা। বর্তমানে আম ঝরে পড়ে গাছ একদম ফাঁকা বললেই চলে। এক লাখ টাকাও পাব না।’
বাগান মালিকরা বলছেন, ‘ঝরে পড়া আমগুলো বিভিন্ন আচার ও জুস কোম্পানির লোকদের কাছে বিক্রি করার চেষ্টা করছি। বাজারে সেকম দাম পাওয়া যাচ্ছে না। এই আমগুলো বিক্রি করে কিছুটা যদি ক্ষতিপূরণ করা যায়, তাতেই মঙ্গল।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আলী বলেন, ১০ থেকে ১৫ মিনিটের ঝড় হয়। এ আকস্মিক ঝড়ে উপজলার ভোলাহাট সদর ইউনিয়ন ও গোহাবাড়ি ইউনিয়নের ৫০ শতাংশ ও দলদলি ইউনিয়নের কিছু কিছু এলাকায় আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, এবার ভোলাহাট উপজেলায় ৩ হাজার ৬৬২ হেক্টর জমিতে আম চাষাবাদ হয়েছে। গত রোববার রাতে হওয়া ঝড়ে ১ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে থাকা আমের ক্ষতি হয়েছে। ৬ হাজার ৮৪০ মেট্রিক টন আম ঝরে পড়েছে। এ সব মিলিয়ে প্রায় ২৮ কোটি টাকার আমের ক্ষতি হয়েছে।
এসব বাগান মালিকদের জন্য কৃষি প্রণোদনার প্রস্তাব পাঠানো হবে। সরকার যদি আম ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের উদ্যোগ নেয়, তাহলে তাদের সাহায়তা করা হবে বলে জানান কৃষি অফিসের এই কর্মকর্তা।
chapainawabgonj.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়