শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ বৈশাখ ৬ ১৪৩১ ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯
আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষাকে সামনে রেখে এরইমধ্যে প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্যরা সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। লক্ষ্য করা গেছে যে ওই চক্রের সদস্যরা ফেসবুক, মেসেঞ্জার এবং হোয়াটস অ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রশ্নপত্র কেনার জন্য শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। মাত্র দুইশ থেকে পাঁচশ টাকার বিনিময়ে গ্যারান্টিসহ বোর্ডের প্রশ্নপত্র শিক্ষার্থীদের হাতে বুঝিয়ে দেয়ার ঘোষণাও দেয়া হচ্ছে ওইসকল পোস্ট বা প্রচারণায়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ড প্রশ্ন ফাঁস রোধে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যারমধ্যে অন্যতম, ‘এবার প্রশ্নপত্রের সেট অনেক বেশি, ‘প্রশ্নফাঁস রোধে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপারের খামে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে প্রতিটি কেন্দ্রে। খাম কেউ আগে খুলে ফেললে ধরা পড়ে যাবে’ এবং পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগে ২৭ জানুয়ারি থেকে পরীক্ষা চলার সময় ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকার বিষয়টি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এদিকে এসব বিজ্ঞাপনগুলো সম্পর্ণ ভুয়া ও ভিত্তিহীন এবং এবার এ ধরনের প্রশ্ন ফাঁসের কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশন ও আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থা। একই সাথে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে বলে তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা জনপ্রিয় চ্যাট ইঞ্জিনগুলোর পাবলিক বা ক্লোজড গ্রুপে যারা প্রশ্ন সরবরাহ করবে বলে চটকদার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, সেগুলো ভুয়া! ইতোমধ্যে সেই সব ভুয়া কন্টেন্টগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ইউনিট ও ডিবির এবং আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে ১০টি টিম ভুয়া প্রশ্নপত্র জালিয়াতদের ধরার জন্য বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে।
এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট ৪ হাজার ৯৬৪টি কেন্দ্রে ২৫ লাখ ৭৩ হাজার ৪৫১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এরমধ্যে এসএসসি পরীক্ষায় ২১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০৭ জন, দাখিল পরীক্ষায় ৩ লাখ ১০ হাজার ২৭২ জন এবং কারিগরিতে অংশ নেবে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭২ জন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঘুরে এবারের প্রশ্নফাঁস চেক্রের অন্তত নয়টি গ্রুপ দেখা গেছে। এরমধ্যে আছে- এসএসসি কোশ্চেন আউট-২০১৯, এসএসসি অল বোর্ড কোশ্চেন আউট ২০১৯, পিএসসি-জেএসসি-এসএসসি-এইচএসসি অল এক্সাম সাজেশন অ্যান্ড কোশ্চেন ব্যাংক, জেএসসি-এসএসসি-এইচএসসি কোশ্চেন আউট, ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপ এসএসসি ব্যাচ ২০১৯, হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ এসএসসি ২০১৯ কিউ গ্রুপ, এসএসসি মিশন ২০১৯ অন্যতম।
বিজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে- ‘এসএসসি ২০১৯ এর সরাসরি বোর্ড কপি প্রশ্ন দিবো। টাকা কোনো এডভান্স নয়। ১০০ ভাগ কমন এর পর দিবা। প্রতি প্রশ্ন টাকা… করে। প্রশ্ন নিতে চাইলে জলদি ইনবক্স করো।’
আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার সূত্রে জানা যায়, ‘সামাজিক মাধ্যমে যেসব প্রশ্ন সরবরাহের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় তা সম্পূর্ণ ভুয়া। এর আগেও আমরা বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছি। আমাদের মনিটরিং সার্বক্ষণিক চলছে, একই সঙ্গে এদের ধরতে অভিযান চলমান আছে।’
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষার আগেই জেলা প্রশাসকদের কাছে প্রশ্নপত্র পৌঁছে দেওয়া হবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে জেলা প্রশাসকদের মোবাইল নম্বরে সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশ্ন সেট জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ীই কেন্দ্র সচিবদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে নির্দিষ্ট প্রশ্নপত্র।
chapainawabgonj.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়